কাউনিয়ায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ২৫হাজার ৬৪২টি পশু
প্রকাশ : 2025-05-26 18:22:18১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক

রংপুরের কাউনিয়ায় ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য ২৫হাজার ৬৪২টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় খামার গুলোতে প্রস্তুত করা এসব পশু এলাকার চাহিদা মিটিয়েও প্রায় ৮হাজার ৪০৩টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। রাসায়নিক ঔষধ ব্যবহার না করে নিরাপদ উপায়ে পশু হৃষ্ট-পুষ্টকরণ করেছে কাউনিয়ার খামারীরা। লালন-পালন খরচ আগের চেয়ে বেশি হওয়ায় দাম চড়া থাকার সম্ভবনা রয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন খামারিদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে লাভের আশায় তারা পশু গুলোকে প্রস্তুত করেছেন। তবে গো-খাদ্যের বাড়তি দামের ফলে তারা পশু গুলোর প্রত্যাশিত মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত। খামারী তাজরুল ইসলাম বলছেন, প্রতি বছর গো-খাদ্য ভূষি, ধানের কুড়া, খৈল, খড়, ঘাসসহ গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে প্রতিটি গরু প্রস্তুত খরচ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই কোরবানির হাট-বাজারে পশুর দাম না বাড়লে তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন। সদর উপজেলার গোপালগঞ্জ এলাকার বাহাদুর জানান, আমি ৩৬টি ভেড়া লালন পালন করছি। এবারের ঈদে ভেড়া গুলোকে ভালো দামে বিক্রি করে ভালো আয়ের স্বপ্ন দেখছি। আশা করছি ভাল দাম পাব। আদর্শ খামারী কবির জানান, আমার খামারের গরুর ক্রেতা ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকার। ইতোমধ্যে খামারের প্রায় সবগুলো পশু বিক্রি হয়েগেছে। আল্লাহর রহমতে ভালই লাভ হয়েছে। জানাগেছে বিগত দিনে কোরবানির পশু ও সারা বছর খাওয়ার জন্য গোশতের চাহিদা মেটাতে ভারতের ওপর নির্ভর করতে হতো। ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি ভাবে পশু উৎপাদনে জোর দেয়ায় দেশে উৎপাদিত পশু দিয়ে কোরবানি ও সারা বছর খাওয়ার গোশতের চাহিদা মিটানো সম্ভব হচ্ছে। টেপামধুপুর হাটে আসা ক্রেতা আলীমুর রাজিম বলেন প্রত্যাশিত বরাদ্দে কাংক্ষিত পশু মিলছে না। পশুর দাম বেশী হওয়ায় আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কোরবানির পশু কেনা নিয়ে সংকটে পড়েছি। কাউনিয়ায় উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার অফিস সূত্র জানায়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার কোরবানির জন্য উপজেলায় ৩২৭৩ জন খামারীর ২৫ হাজার ৬৪২টি বিভিন্ন ধরনের পশু প্রস্তুত রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার চাহিদার উদ্বৃত্ত রয়েছে ৮হাজার ৪০৩টি পশু। খামারীরাই সিংহভাগ কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন। এবার চাহিদা ধরা হয়েছে, ১৭ হাজার ২৩৯টি। মজুদ পশুর মধ্যে ষাঁড় ৬৬৩১টি, বলদ ২০২৬টি, গাভী ২০৮২টি, মহিষ ১০৮টি, ছাগল ১৩৯৪৫টি, ভেড়া ৮৪২টি, অন্যান্য ৮টি, মোট ২৫৬৪২টি। উপজেলায় চাহিদা ১৭২৩৯টি, উদ্বৃত্ত ৮৪০৩টি। উপজেলায় মোট খামারীর সংখ্যা ৩২৭৩জন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এআরএম আল মামুন জানান, এ বছর চাহিদার তুলনায় প্রায় ৮ হাজার ৪০৩টি পশু বেশি রয়েছে। তাই বিগত বছর গুলোর মতো এবারে পশুর সংকট হবে না। তিনি বলেন তাদের নজরদারির ফলে প্রাণি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর স্টেরয়েড ও হরমোন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে পশু মোটাতাজা করা হয়নি বললেই চলে। তিনি আশা করেন, এ বছর কোরবানির পশুর বাজার মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। এছারাও পশু পরিবহন, অর্থ লেনদেনে সাবধানতা অবলম্বন বিষয়েও খামারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।