বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০, থানা ঘেরাও

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১৬:৫১ | আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫, ২১:৫১

অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলের জেরে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০জন নেতাকর্মী আহতের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের পরে জোরারগঞ্জ থানা ঘেরাও করে মিছিল করেছে একটি পক্ষ।
রোববার (২৯ জুন) রাতে বারইয়ারহাট পৌরবাজারে জোবেদা ফার্মেসির সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক নুরুল আমিন এবং আরেক যুগ্ম-আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এতে আহতরা হলেন- উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক মঈন উদ্দিন লিটন, বিএনপি নেতা গোলাম মাওলা, কাশেম মাহফুজ, শাফায়েত হোসেন শুভ, শাহীন আলম নিশাত, তানবীর হোসেন, মো. বাদশা, জাহিদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। গুরুতর আহত অবস্থায় গোলাম মাওলা ও কাশেম মাহফুজকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আজিজুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে রোববার রাতে জোরারগঞ্জ থানায় বিক্ষোভ করে বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। পরে রাতে মাঈনুল ইসলাম রাহাত নামে আহত এক ব্যক্তি ৩০ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে জোরারগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক নুরুল আমিনের অনুসারী মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আজিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, রোববার রাতে বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মঈন উদ্দিন লিটনসহ আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে কাশবন রেস্টুরেন্টে চা-নাস্তা খেতে যাই। সেখান থেকে বের হলে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া সন্ত্রাসীরা আমার এবং নেতাকর্মীদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন ও বারইয়ারহাট পৌরসভার বিএনপির আহ্বায়ক দিদারুল আলম মিয়াজীর অনুসারীরা আমাদের উপর এই ন্যাক্কারজনক হামলা চালায়। তাদের নোংরা হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশকে ফোন দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। তারা আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো। আমরা মামলা করেছি। আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারী মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, বারইয়ারহাট পৌর বাজারে নিয়মিত আমাদের শতশত নেতাকর্মী অবস্থান নেয়। কাশবন হোটেলের সামনে রোববার রাতে ছাত্রদল ও যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মী দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের অনুসারী নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের নিয়ে কটূক্তি করে। এক পর্যায়ে সেটি বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। এরপর তারাই প্রথমে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। তাদের হামলায় শাফায়েত হোসেন শুভ, শাহীন আলম নিশাত, তানবীর হোসেন, মো. বাদশা, জাহিদুল ইসলামসহ একাধিক ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. সালাউদ্দিন জানান, হামলায় আহত হওয়া চারজনকে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। গোলাম মাওলা ও কাশেম মাহফুজ নামে দুইজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, বিএনপির দলীয় কোন্দল থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রাতে বিএনপি একপক্ষের নেতাকর্মীরা থানায় আসে। মাঈনুল ইসলাম রাহাত নামে একজন এজাহারনামীয় ৩০ জন এবং অজ্ঞাত ৫০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। আমরা মামলা নিয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত