যশোরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৪ বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর

প্রকাশ : 2025-04-15 10:54:54১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

যশোরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৪ বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে যশোর সদরে ১৪টি বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার রুপদিয়া মধ্যপাড়ায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইজিবাইকচালক মিলন হোসেন বাদী হয়ে ঘটনার দিন রাতে যশোর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করেন।

এতে স্থানীয় খবির খাঁ, জাহিদ আলী, রমজান আলী, সাদ্দাম হোসেন, জুবায়ের হোসেন, আসলামসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৪০-৫০ জনকে এই হামলার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর দাবি, হামলাকারীদের বেশিরভাগই জামায়াতের সমর্থক।

এদিকে, সোমবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ১৪টি বাড়িঘর পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এসময় তারা ক্ষতিগ্রস্তদের চাল ও নগদ টাকা সহায়তা দেন। সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকনের নেতৃত্বে স্থানীয় নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির বিপুল নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলার শিকার নারীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ১৪টি বাড়িঘরে নির্বিচারে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তাদের লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন নারীও জখম হন। ঘরে থাকা ফ্রিজ, টিভি ভাঙচুর করা হয়। কয়েক লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাও লুট করে তারা। জামায়াত নেতা হিসেবে পরিচিত স্থানীয় প্রভাবশালী খবির খাঁ ও তার লোকজন এখনও তাদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলছেন। না হলে তাদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। যেকোনো সময় আবারও হামলার শিকার হতে পারেন বলে আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন তারা।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ নিতে গিয়ে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নির্দেশে আমরা আপনাদের দেখতে এসেছি। বিএনপি আপনাদের পাশে আছে। আতঙ্কিত হবেন না। যারা এ হামলার জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে যাতে যথাযথ আইনগত নেওয়া হয় সে জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত খবির খাঁর নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক শাহাবুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গোলযোগ ছিল দীর্ঘদিন ধরে। জমির মালিক খবির খাঁন। ওই জমিতে তিনি ১৫ বছর আগে সাময়িকভাবে পরিবারগুলোকে থাকতে দিয়েছিলেন। তারা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে জোর করে থেকে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পেও বসাবসি হয়। তারা একমাস সময় চেয়ে নিয়েছিল, তার পরেও জায়গা থেকে সরতে চাইছে না। এটা তাদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব। স্থানীয় সুবিধাবাদি গোষ্ঠী এটাকে রাজনৈতিক রং লাগিয়ে জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) বাবলু খান কাজী বাবুল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে জামায়াত নেতাসহ কয়েক জনের নামে মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে। এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।

কা/আ