একাত্তরের ৭ই মার্চ
প্রকাশ: ৭ মার্চ ২০২৪, ২১:৫৪ | আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৬
গ্রামের ছেলে আমি
একাত্তরের ৭ ই মার্চে ছিলাম গ্রামেই-
আমাদের গ্রাম থেকে ঢাকা বহু দূরে
লঞ্চে পাঁচ ঘন্টার পথ যেতে হয় ঘুরে।
৭ই মার্চ দুপুরে- পুকুরে দিয়ে ডুব
শরীর মুছে মুখে চারটি গুজে
বসে আছি রেডিও নিয়ে-
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনবো বলে।
দেশের গান শুনছি আর ভাবছি
এখনই শুরু হবে নেতার ভাষণ
কষ্ট দুঃখ বঞ্চনা মুক্ত হবে বাঙালি
অবসান হবে শোষণ পাকিস্তানি শাসন ।
কিন্তু একি! হঠাৎ রেডিও হয়ে গেল অফ
ভাষণের জন্য আমরা উদগ্রীব- মনে বড় দন্ধ
কেন হলো রেডিও বন্ধ?
রেডিওর নব ঘুড়াতে ঘুড়াতে হয়ে ক্লান্ত
অপেক্ষার গ্লানি নিয়ে
বিশ্রাম নেই বিছানায় গিয়ে।
সন্ধ্যার পরে হঠাৎ একজন এসে বলে
ভাষণ প্রচারিত হবে আগামীকাল সকালে।
উত্তেজনায় সারা রাত আসেনি ঘুমখানি
কখন হবে সকাল
কখন শুনবো নেতার বজ্রকন্ঠে অমর বাণী।
সকালে গিয়ে আশু পোদ্দারকে বলি
মাইক দিতে হবে-
শোনাবো ভাষণ জনতাকে।
শুনে আশু পোদ্দার বলে-
কী আনন্দ আহা রে!
শ্রীনগর কাঠপট্টিতে দুটি হর্ণ দিলাম টানিয়ে
বাংলা খবরের পরে ঘোষণা প্রচারিত হলো-
শুরু হলো বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ-
' ভায়েরা আমার - আজ দু:খ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে
আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি-
আপবারা সবই জানেন- সবই বুঝেন......
মন্ত্রমুগ্ধ মনে মাটিতে পেতে আসন
হাজার জনতা শুনে বজ্রকণ্ঠ ভাষণ।
কারো মুখে কথা নেই, চোখে নেই পলক
ভাষণ শুনে হৃদয়ে জাগে নতুন ঝলক।
" এ বারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এ বারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা"।
মনে হলো পলাশী থেকে সিরাজ এসেছে
মুজিব বেশে নিয়ে নতুন এক মন্ত্র
বাঙ্গালির মুক্তি ও বাংলার স্বাধীনতার জন্য।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত