দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি, লাভবান হচ্ছে খামারী

কাউনিয়ায় জমি স্বল্পতায় রাস্তার ধারে হচ্ছে ঘাস চাষ

  সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:০০ |  আপডেট  : ৬ মে ২০২৫, ১১:৩৭

গো খাদ্যের সস্কট, কম খরচে বেশি লাভ ও গবাদি পশুর প্রধান খাদ্য হিসেবে ঘাসের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরের কাউনিয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে রাস্তার ধারে ঘাস চাষে ঝুঁকছে কৃষকেরা। গরুর থামার বৃদ্ধিতে ঘাস এখন সবুজে সোনায় পরিনত হয়েছে। অন্যদিকে ঘাস চাষে নিজের পশুর খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে তা বিক্রি করে বার্ড়তি আয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। 

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে রাস্তার দুই ধারে ও পরিত্যক্ত জমির পাশাপাশি বিভিন্ন জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করছে খামারিরা। খামারীদের কাছ থেকে জানাগেছে নেপিয়ার ও পাংচং ঘাস দুগ্ধ জাত গাভীকে খাওয়ালে বেশী পরিমানে দুধ হয়, এছাড়াও গাভীন গরু কে এ ঘাস খাওয়ালে বাছুর অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পায় এবং স্বাস্থ্যবান হয়। ফলে এসব ঘাসের জনপ্রিয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাট ও বাজার গুলোতে ভ্যানে করে ঘাস বিক্রি করে নিজের কর্মসংস্থান নিজেই সৃষ্টি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেকেই। দুগ্ধভান্ডার নামে খ্যাত রংপুরের কাউনিয়ায় গবাদিপশুর গো-খাদ্যের উপর অর্থনৈতিক চাপ কমাতে পরিত্যক্ত পতিত জমি ও সড়কের দুই পাশে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেছে খামারিরা। এতে কমে আসছে গো-খাদ্য হিসেবে ফিডের নির্ভরতা, কমেছে খামারিদের গরু লালন-পালনের খরচও। পাঞ্জরভাঙ্গা গাভী পালন দলের সভানেত্রী জাতীয় স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত দুগ্ধ খামারী রেনু বালা জানান, দুগ্ধ খামার প্রতিষ্ঠার পর থেকে গো-খাদ্যের সংকটে ছিল, বর্তমানে নিজ জমি ও রাস্তার ধারে ঘাস চাষ করায় এ সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। এই ঘাস গরুকে খাওয়ানোর পর আবারও গোড়া থেকেই গজায়। দুগ্ধ উৎপাদনে অগ্রনী ভুমিকা রাখছে ঘাস। কৃষক প্রহলাদ চন্দ্র বলেন, বর্তমান বাজারে দানাদার খাদ্যের দাম অনেক বেশি। তাই আমি ঘাষ চাষ করেছি। অনেকগুলো গরু পালন করছি। এই ঘাস গরুকে খাওয়ার কারনে আমি অনেক উপকৃত হচ্ছি। প্রণী সম্পদ বিভাগ জানায় রংপুরের মধ্যে কাউনিয়া ইতো মধ্যে দুগ্ধ উৎপাদনে ১ম স্থানে রয়েছে। এ উপজেলায় প্রায় ৭ কিঃমিঃ রাস্তার ধারে ঘাস চাষ হয়েছে। গবাদি-পশুর প্রাকৃতিক উপায়ে পুষ্টির যোগান বাড়াতে ঘাস প্রধান খাদ্য। উপজেলায় বড় ও ছোট পরিসরে ঘাস খাওয়ার উপযোগী প্রায় ৮লক্ষ ৫৬ হাজার ৭৯১ টি গবাদিপশু রয়েছে। এর মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ আছে। কাউনিয়ায় দুধ উৎপাদন হয় ১৭২২.২২মেঃটন। তাই গো-খাদ্যের চাপ কমানো ও পশুর প্রাকৃতিক পুষ্টি বাড়াতে সড়কে নেপিয়ার ও জারাসহ বিভিন্ন জাতের ঘাস লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণী সম্পাদ বিভাগ। সড়কের দুই পাশে লাগানো নেপিয়ার জাতের ঘাস একদিকে যেমন সড়কে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও ভূমি ক্ষয় রোধ করছে অন্যদিকে লাভবান হচ্ছেন খামারিরা। উপজেলার ভেলুপাড়া এলাকার খামারি এরশাদুল হক বলেন, প্রাণীসম্পদ বিভাগের পরামর্শে পরিত্যক্ত জমি ও রাস্তার পাশে ঘাস লাগিয়েছি। নিজের গবাদিপশুর চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয়ভাবে বিক্রিও করি। দুগ্ধ উৎপাদনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকারী ভাবে এ ঘাস চাষে খামারীদের প্রনদনা প্রদানসহ ব্যাংক ঋণ প্রদানের ব্যাবস্থা করলে চাষিরা আরও উৎসায়ীত হবে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এআরএম মামুন জানান ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্টের আওতায় ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে প্রায় প্রতিটি খামারী নিজ জমির পাশাপাশি রাস্তার ধারে এসব ঘাসের চাষ করছে। 
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত