সাবেক এমপি মৃণাল কান্তির সম্পদ জব্দ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১৫:১৭ | আপডেট : ২৫ জুন ২০২৫, ২৩:২২

সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী নীলিমা দাসের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ এবং তাদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার (২৫ জুন) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এই আদেশ দেন।
জব্দকৃত সম্পদের মধ্যে মৃণাল কান্তি দাসের নামে রয়েছে— রাজধানীর ধানমন্ডিতে ১৮ লাখ টাকা মূল্যমানের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, পূর্বাচলে ২০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি প্লট এবং ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি মোটরগাড়ি।
এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকে তার নামে থাকা ৮টি হিসাবের মোট ৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, মৃণাল কান্তি দাসের স্ত্রী নীলিমা দাসের নামে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় সাড়ে ১২ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি, তার ওপর ২০ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি ফ্ল্যাট জব্দ এবং ৩০টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১০ লাখ ৬১ হাজার টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আসামি মৃণাল কান্তি দাস সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্বে থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে, অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধভাবে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন।
দুদকের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, মামলার তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তারা এসব সম্পদ অন্যত্র বিক্রি, হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টায় ছিলেন। এ কারণে আদালতের কাছে এসব স্থাবর সম্পদ জব্দ এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করার আবেদন জানানো হয়।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
এদিকে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের পৃথক দুই মামলায় মৃণাল কান্তি দাসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এক মামলা তার স্ত্রী নিলীমা দাসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৫ জুন) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য জানান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। দুদক গোপন সূত্রে জানতে পেরেছে, মৃণাল কান্তি দাস এবং নিলীমা দাস গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে মামলার তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে দুদক।
গত ১৮ মার্চ মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী নীলিমা দাসের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এক মামলায় তারা দুইজনই আসামি।আরেকটিতে এক মামলায় মৃণাল কান্তি দাস একা আসামি।
মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাহজাহান মিরাজ। মৃণাল কান্তি দাসের মামলায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৫৫ লাখ ১৭ হাজার ২৩০ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া ২০১৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে তার আটটি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা জমা এবং ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা তোলাসহ মোট ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদকের অভিযোগ, দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত অর্থের অবৈধ উৎস গোপন করতে সাবেক এমি মৃণাল কান্তি এসব সম্পদ ‘রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করেছেন।' দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জুলফিকার তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
মামলায় অভিযোগ, নীলিমা দাস তার স্বামীর সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখেছেন।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত