স্বামীর ৩৯ হাজার কোটির সাম্রাজ্যের উত্তরসূরি হলেন না কারিশমা কাপুর

আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে কারিশমা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী ও শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, খেলার মাঠে দুর্ঘটনাবশত মৌমাছি গিলে ফেলায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। 

সঞ্জয় কাপুর ছিলেন বৈদ্যুতিক যানবাহন প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘সোনা কম্পস্টার’-এর কর্ণধার। সংস্থাটি ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে কাজ করে থাকে। ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, এই কোম্পানির বাজারমূল্য ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৯,০০০ কোটি টাকা।

যে কারণে সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর প্রশ্ন উঠছে—কার হাতে উঠছে এই ব্যবসায়ীর গড়া ৩৯ হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য?

ভারতীয় গণমাধ্যম জানাচ্ছে, বিস্ময়করভাবে এত বড় সাম্রাজ্যের দায়িত্ব সঞ্জয়ের স্ত্রী বা সন্তানদের হাতে যাচ্ছে না। বরং এই প্রতিষ্ঠানের হাল ধরতে চলেছেন সঞ্জয়ের দুই বোন—সুপর্ণা কাপুর ও মন্দিরা কাপুর কইরালা।

দুই বোনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। সুপর্ণা একজন খ্যাতনামা ম্যাগাজিনের সম্পাদক। অন্যদিকে মন্দিরা ‘সোনা মন্দিরা প্রাইভেট লিমিটেড’-এর সিইও, যা মূলত অটোমোবাইল খাতে কাজ করে।

একসময় সঞ্জয়ের সঙ্গে ‘সোনা’ নামক স্বত্বাধিকার নিয়ে আইনি লড়াইয়ে জড়িয়েছিলেন মন্দিরা। তবে সময়ের সঙ্গে সব গুছিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং এখন তাদের হাতেই যাচ্ছে পারিবারিক এই ব্যবসার ভার।

সঞ্জয় তিনটি বিয়ে করেছিলেন। প্রথম স্ত্রী ছিলেন বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর। তাদের দুই সন্তান—সামাইরা ও কিরণ। বিচ্ছেদের পর সঞ্জয় সন্তানদের জন্য ১৪ কোটি টাকার বন্ড সই করেন, যাতে সুদসহ প্রতিমাসে ১০ লাখ টাকা করে সন্তানদের অ্যাকাউন্টে আসে। এছাড়া খার অঞ্চলে একটি বিলাসবহুল বাড়িও রেখে গেছেন সন্তানের নামে।

পরবর্তী সময়ে প্রিয়া সচদেবকে বিয়ে করেন সঞ্জয়, তাদের ঘরেও রয়েছে এক সন্তান। তার জন্যও সুনির্দিষ্টভাবে সম্পত্তি বরাদ্দ রেখে গেছেন তিনি।

বিচ্ছেদের পর কারিশমা ও সঞ্জয় প্রথমদিকে একে অন্যকে এড়িয়ে গেলেও এক সময় তারা একে অন্যের সাথে কথ বলতে শুরু করেন। সন্তানদের জন্মদিনে কারিশমা নিমন্ত্রণ করতেন তাদের বাবাকে। সঞ্জয়ও শত ব্যস্ততার মাঝে ছেলেমেয়েদের সময় দিতেন। মৃত্যুর আগে দীর্ঘ সময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কেই ছিলেন কারিশমা ও সঞ্জয়।

তবে হঠাৎ করে এই অকালপ্রয়াণে স্তব্ধ কাপুর পরিবার। কোটি টাকার সাম্রাজ্য নিয়ে যতই আলোচনা হোক না কেন, এই শোক কাটিয়ে ওঠা যে সহজ হবে না, তা বলাই যায়।