সান্ডার মাংস খাওয়া হালাল নাকি হারাম?

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১২:২৪ | আপডেট : ১৯ মে ২০২৫, ১৪:২৮

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাবারের প্রতি বিশেষ রুচি ও ঐতিহ্য রয়েছে, এবং এর মধ্যে আরব বিশ্বে সান্ডা খাওয়ার প্রথা রয়েছে। তবে, সম্প্রতি এই সান্ডার মাংস খাওয়া নিয়ে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষত, গুই সাপ এবং সান্ডা খাওয়ার মধ্যে পার্থক্য এবং এর প্রভাব নিয়ে মতবিনিময় চলছে। চলুন দেখে নেয়া যাক, সান্ডার মাংস খাওয়ার ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি কী?
আরব অঞ্চলে সান্ডা একটি জনপ্রিয় খাবার, যা বিরিয়ানিতে ব্যবহৃত হয়। তবে, একে গুই সাপের সাথে তুলনা করলে দেখা যায়, দুটো প্রাণী এক নয়। গুই সাপ অত্যন্ত বিষাক্ত, যার লালা মানুষের জন্য বিপজ্জনক। সাপের আতঙ্কজনিত আচরণ ও তার বিপজ্জনক বিষয়ের কারণে গুই সাপকে খাওয়া নিয়ে সতর্কতা রয়েছে। কিন্তু সান্ডা একটি নিরীহ প্রাণী, যা শুধুমাত্র লতা ও পাতার মতো উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে। সান্ডা অনেক বেশি শান্ত প্রকৃতির এবং এর জীবনধারণের স্থান ও খাবারের ধরনও সম্পূর্ণ আলাদা।
সান্ডা খাওয়ার ঐতিহ্য
আরাবিয়ানরা সান্ডাকে বিরিয়ানি তৈরির জন্য ব্যবহার করে থাকে, এবং এর তেল শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশেষভাবে পুরুষের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ব্যথা কমানোর জন্য সান্ডার তেল ব্যবহার করা হয়। তবে, এর পুষ্টিগত গুণাগুণ নিয়ে বৈজ্ঞানিক কোনো গবেষণা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ: নবীজি কি বলেছেন?
এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি। ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সান্ডার মাংস খাওয়ার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি। সহীহ মুসলিমের একটি হাদিসে বলা হয়েছে, নবীজি যেসব প্রাণী খাওয়ার অনুমতি দেননি, তা হচ্ছে হিংস্র প্রাণী, যা মানুষকে আক্রমণ করতে পারে। সান্ডা এই ক্যাটেগরিতে পড়ে না, কারণ এটি আক্রমণাত্মক প্রাণী নয় এবং তা খেতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
হানাফী মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গি
হানাফী মাযহাবের অনুসারীরা সান্ডা খাওয়ার প্রতি বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করেন, কারণ এটি কিছুটা আক্রমণাত্মক হতে পারে, বিশেষত সান্ডা যখন শিকারী হয়। এর ফলে, হানাফী মাযহাবের মধ্যে সান্ডা খাওয়াকে পছন্দনীয় মনে করা হয় না, যদিও এটি নিষিদ্ধ নয়। তবে, ইসলামী শাস্ত্রবিদদের মতামত বিভিন্ন হতে পারে।
চর্বিযুক্ত সান্ডা: স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব
সান্ডা অত্যন্ত চর্বিযুক্ত প্রাণী, এবং অতিরিক্ত চর্বি খাওয়ার ফলে শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষত, এটি মানুষের ফ্যাটি লিভার বা যকৃৎজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই, মেধা ও পরিমাণে সান্ডা খাওয়া উচিত।
সান্ডার মাংস খাওয়া ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে অতিরিক্ত খাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং, সান্ডার মাংস খাওয়ার আগে সঠিক পন্থা এবং পরিমাণে খাওয়া উচিত। ইসলামী শাস্ত্র ও মাযহাব অনুসারে, একজন মুসলমান তার নিজস্ব অবস্থান এবং শরীরের সুস্থতার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
সা
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত