আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী সীমান্ত ক্রসিংয়ে আবার বাণিজ্য শুরু হয়েছে

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী সীমান্ত ক্রসিংয়ে আবার বাণিজ্য শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার ব্যস্ত এ বাণিজ্যিক পথ চালু হয়। তালেবান সরকার এক সপ্তাহ পথটি বন্ধ রেখেছিল।

 ২০০১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে তালেবান সরকার। ইসলামাবাদের অভিযোগ, তালেবান সরকার আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে জঙ্গিদের উত্থান ঘটাচ্ছে। আর এই জঙ্গিরা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। তবে কাবুল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পাহাড়ি অঞ্চলের মধ্যে বেশ কয়েকটি সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে। বিতর্ক ও সহিংসতার কারণে এগুলো প্রায়ই বন্ধ রাখা হয়।

গতকাল শনিবার সকাল ছয়টার দিকে তোর্কহাম সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়। আফগান কাস্টমস কর্মকর্তা মুসলিম খাকসার বলেছেন, ওই সীমান্ত ক্রসিং দেশটির পূর্বাঞ্চলের নানগড়হার প্রদেশে অবস্থিত।

পাকিস্তানি একজন কাস্টমস কর্মকর্তা বলেন, নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের জন্য দুপাশ থেকেই সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছে। চাল, সিমেন্ট, নির্মাণসামগ্রী, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আফগানিস্তানের দিকে পাঠানো হয়েছে। তবে তিনি এমনও বলেন, প্রায় ১ হাজার ৪০০ ট্রাক আফগানিস্তান সীমান্ত পার হওয়ার অপেক্ষায় আছে।

ঘটনাস্থল থেকে এএফপির একজন প্রতিনিধি বলেন, দিনের পর দিন আটকে থাকার পর দুই দেশ থেকে কয়েক শ লোক গতকাল সীমান্ত পার হয়েছে।

আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরের বাসিন্দা হারুন এএফপিকে বলেন, অসুস্থ মায়ের সঙ্গে তিনি ওই সীমান্তে পাঁচ থেকে ছয় দিন ধরে আটকে আছেন। তাঁর মায়ের মতো কয়েক হাজার রোগী আছে। তারা পাকিস্তানে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলেন, এই সীমান্ত সব সময় খোলা রাখা উচিত। এটি রোগীদের উপকার করে। বাণিজ্য সম্প্রসারণেরও কাজে আসে।

চিকিৎসার কারণে পাকিস্তানে যেতে রোগীদের যারা সহায়তা করে, তাদের ওপর দেওয়া নতুন নিয়মের প্রতিবাদ জানানোর পর গত রোববার আফগান সরকার ওই সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। তবে পাকিস্তানের কর্মকর্তারা নিয়ম বদলের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবারের মতো তোরকহাম সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পাকিস্তানের কাস্টমস কর্মকর্তা বলেছেন, পরিচয়পত্র দেখানোর পর আফগানদের রোগী নিয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

কাগজপত্র পরীক্ষার পর হুইলচেয়ারে থাকা অনেক রোগীকে সীমান্ত ক্রসিং পার হতে দেখা গেছে।

২০২১ সালে সেনা–সমর্থিত সরকারের পতনের পর থেকে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান দুই দেশই অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে।