কাউনিয়ায় তিস্তার চরে বাদামের বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের

প্রকাশ: ৭ মে ২০২৫, ১৭:৪৫ | আপডেট : ৮ মে ২০২৫, ০৭:১৩

তিস্তা নদীর ভাঙ্গাগড়ার খেলায় প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে টিকে থাকা মানুষগুলো চরে বাদাম চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে চলতি খরিপ-১ মৌসুমে বাদামের বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় আশা কৃষকের। তিস্তার চরের কৃষক বাদামের সবুজপাতা হলুদ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
সরেজমিনে তিস্তা নদী বেষ্টিতে চরাঞ্চলের চর ঢুসমারা, চর গদাই, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, চর নিজপাড়া, আরাজি হরিশ্বর, গুপিডাঙ্গা, প্রাননাথ চর, চর নাজিরদহ, চর পল্লীমারী, চর গনাই, হরিচরন শর্মা, চর হয়বৎখাঁ, চর বিশ্বনাথসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে দিগন্ত চর জুড়ে বাদাম আর বাদামের ক্ষেত। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি খরিপ-১ মৌসুমে বাদামের বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় আশা কৃষকের। কৃষি বিভাগের সূত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৭০, চাষ হয়েছে ৮৭৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ১৮৭১ মেঃটন। চরে বেশির ভাগ বিনা-৪ বারি ৬-৮-৯ এর চাষ হয়। চরগনাই গ্রামের বাদাম চাষি দুদু মিয়া জানান চলতি মৌসুমে ৫০ দোন জমিতে বাদাম চাষ করেছেন, বর্তমানে বাদামের অবস্থা ভাল আছে, প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। বিশ^নাথ গ্রামের বাদাম চাষী আঃ বাকী, গোলাম মোস্তফা, বছির উদ্দিন, নিজপাড়া গ্রামের খয়বর, মোফাজ্জল, পাঞ্জর ভাঙ্গার পুস্পেন্দ্র, সুবোদ ও দিনেশের সাথে কথা বলে জানাগেছে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে বাদাম চাষ করেছেন। তাদের আশা যদি বৃষ্টি ও নদীর পানিতে বাদাম তলিয়ে না যায় তাহলে লাভের মুখ দেখবেন। বর্তমানে বাদাম ৪০০০ থেকে ৪২০০ টাকা মণ দরে বিক্রয় হচ্ছে। সকল খরচ বাদ দিয়ে এ মৌসুমে বাদামে লাভের আশা করছেন তারা। যদি তিস্তা নদীতে হঠাৎ পানি বাড়ে তাহলে তাদের স্বপ্ন ভেসে যেতে পারে। ঢুষমারা চরের বাদাম চাষী তাজুল ইসলাম জানান ১৪ দোন জমিতে বাদাম চাষ করেছে, যদি নদীতে হঠাৎ পানি না হয় তবে ভাল ফলন ও দাম পাওয়ার আশা করছেন। গদাই গ্রামের বাদাম চাষি আলআমিন জানান, বাদামের ভাল বীজের সংকট, তাই প্রতিবছর কৃষিবিভাগ যদি ভালমানের বীজের ব্যাবস্থা করে তরে কাউনিয়ায় আরও বেশী পরিমান জমিেিত বাদাম চাষ হবে। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, ইউনিয়নটি তিস্তা নদী বেষ্টিত। ফলে বেশিরভাগ এলাকা নদীগর্ভে। নদীতে চর জেগে উঠায় নদী পাড়ের মানুষ গুলো ব্যাপক হারে বাদাম চাষ করছেন। চাষিদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া হলে তারা বাদাম চাষে আরও আগ্রহী হবেন। কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানিয়া বাকতার জানান, চলতি খরিপ-১ মৌসুমে আবহাওয়া ভাল থাকায় বাদামের বাম্পার ফলনের আশা তার। গত বছর বাদামের ভাল দাম পাওয়া এবার কৃষকরা লাভবান হওয়ার আশায় বেশি পরিমান জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগ বাদাম চাষিদের প্রতিবছর বিনামূল্যে বীজ ও পরামর্শে দিয়ে সহায়তা করে আসছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত