পঞ্চগড়ে চাঁদার দাবি অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ: ৮ মে ২০২৫, ১০:৫৮ | আপডেট : ৮ মে ২০২৫, ১৫:৪৫

গ্রামীণ সড়ক সংস্কারের লক্ষ্যে মাটি ভরাটের কাজে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনাটিকে ভিত্তিহীন, বানোয়াট, ষড়যন্ত্রের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপি নেতারা। বুধবার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলন করেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে হাড়িভাসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিয়াউল হক, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান বুলবুল, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গোলাম রব্বানী, সাধারণ সম্পাদক আসমাউল সহ বিএনপির নেতাকর্মী সহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা দাবি করেন, গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রামের বাসিন্দা বাবুলের বাড়ি থেকে নাককাটিপাড়া গ্রামের নওশেরের বাড়ি পর্যন্ত কাঁচা সড়ক সংস্কার এবং একটি ইউড্রেন নির্মাণের জন্য দুই লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে। প্রকল্পটির সভাপতি করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিউল আলম শফিককে। তবে শুরুর দিকে তিনি সড়কে হালকা মাটি ছিটিয়ে দিয়ে আর কিছু বালু এনে রাখার কথা জানান স্থানীয়দের। তবে রাস্তার কাজের মান খারাপ হওয়ার বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিয়াউল হক ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রব্বানী ও আসমাউলকে পাঠান। তারা এসে দেখতে পান রাস্তবায়ন অল্প পরিমাণে মাটি দিয়ে লেভেল করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারের কার্যালয় থেকে এক কর্মকর্তা গেলে তার মাধ্যমে জানতে পারেন রাস্তবায়ান ছয় ইঞ্চি মাটি ভরার হবে প্রশস্ত হবে ১০ ইঞ্চি। কিন্তু তা না করে ইউপি সদস্য শফিউল আলম শফিক তিন ইঞ্চি মাটি ভরাট করছেন। পরে এ নিয়ে গইছপাড়া বাজার এলাকায় বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। তবে কখনোই ইউপি সদস্যর কাছে বিএনপির কেউ কোনো টাকা দাবি করেননি।
হাড়িভাসা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিয়াউল হক বলেন, আমার বাড়ী থেকে কিছু দূরেই বনগ্রাম সড়কের মাটি ভরাটের কাজ চলছিল। তবে সামান্য কিছু মাটি বিছিয়ে দিয়ে রাস্তাার কাজ শেষ করতে চেয়েছিলেন ইউপি সদস্য। বর্ষায় রাস্তাটি কাদায় ভরা থাকে। স্থানীয়রা যাতায়াতে খুব কষ্ট পান। এ কারণে স্থানীয়রা চেযয়েছিল রাস্তায় ভালোভাবে মাটি ভরাট হোক। আমি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক কে সেখানে পাঠাই কাজটির মান দেখার জন্য। তবে এখানে এসে তাদের সাথে ইউপি মেম্বার খারাপ আচরণ করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির একটি মিথ্যা অভিযোগ তোলেন যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
হাড়িভাসা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গোলাম রব্বানী বলেন, ইউপি সদস্য সঠিক চক্রান্ত করে আমাকে ফাসিয়েছে। আমরা তার কাছে কোন চাঁদা দাবি করিনি। আমাদের অপরাধ আমরা ভালো মানের কাজ চেয়েছিলাম। রাস্তাটি যেন ভাল হয়। তবে তারা আমাকে যে নিয়ে যে ভিত্তিহীন কথা ছড়িয়েছে, আমি তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।
হাড়িভাসা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসমাউল বলেন, রাস্তার কাজ শুরু সময় ট্রলি দিয়ে মাটি ভরাটের জন্য আমাদের কয়েকটি ট্রলির সাথে ৭০০ টাকা হিসেবে ভাড়া করা হয়। পরে জানতে পারি আমাদেরকে বাদ দিয়ে ৬০০ টাকা হিসেবে অন্য ট্রলির সাথে দাম করা হয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তার সাড়ে ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রাস্তার কাজের মান খারাপ হওয়া নিয়ে আমরা স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরে প্রতিবাদ করেছিলাম। পরে আমাদেরকেই ফাঁসানো হয়েছে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মান্নান বলেন, চাঁদাদাবির বিষয়টি আমি শুনেছি কয়েকজনের মুখে। তবে সত্যি কতটুকু জানিনা। তবে তারা গত কয়েকদিন আগে আমার সাথে ও চেয়ারম্যানের সাথে খারাপ আচরণ করেছিল।
হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, বিএনপির সভাপতি রব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আসমাউল আমার কাছে যে টাকা চেয়েছে তার ভিডিও বক্তব্য সহ সাক্ষী আছে আমার কাছে। কিন্তু এরপরেও তারা উল্টো আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমি নাকি কাজের মান খারাপ করতেছি। আমার কাজ মূলত শুরু হয়েছে কেবল এখনো শেষ হয়নি। তার আগে খারাপ ভালো কিভাবে বিবেচনা করলেন তারা। আমার কাজ তো উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় বুঝে নিবে। কিন্তু তারা এসে আমার কাছে চাঁদা দাবি করে কাজ নিজেরাই করতে চায় আমি এর প্রতিবাদ করাই এখন আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত