পঞ্চগড়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
শিক্ষক সিন্ডিকেটের ঘুষ বাণিজ্য: অসহায় শিক্ষকরা

প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৫, ১৫:০০ | আপডেট : ১ জুলাই ২০২৫, ১৯:৪৭

পঞ্চগড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সিন্ডিকেটের ঘুষ বাণিজ্যে শিক্ষকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই সিন্ডিকেটের কথা না শুনলে শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। শিক্ষক বদলি, অবসর ভাতা বা পেনশন, এমনকি কোন বিদ্যালয়ে বরাদ্দের পরিমাণ কত হবে—সবকিছুই এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। একেকজন শিক্ষক নেতা একেক দায়িত্বে রয়েছেন।
পঞ্চগড়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৪১ জন শিক্ষকের বকেয়া বিল দিতে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।। উপজেলা ও জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে দেওয়ার কথা বলে এ অর্থ নেন বড়বাড়ি গোয়ালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল কাইয়ুম, ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক চঞ্চল মাহমুদ ও মালিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। বিষয়টি জানাজানি হলে বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ঘটনাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, সদর উপজেলার ৭৩ জন জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ শিক্ষকের মধ্যে বেতন সমতাকরন বকেয়া বিল, ডিপিএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্কেলে বেতন পূর্ননির্ধারন সংক্রান্ত ২৭ জনের বিল এবং প্রধান শিক্ষকের চাকুরি স্থায়ীকরনের জন্য ৪১ জনের অর্থ উত্তোলন করে অভিযুক্ত এ তিন শিক্ষক। এ ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা অফিস ঘিরে রয়েছে আইয়ুব আলীসহ কয়েকজনের বড় সিন্ডিকেট।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন সহকারি শিক্ষিকা মোছা. সুইটি বেগম বলেন, ডিপিএড এর বকেয়া বিলের জন্য চঞ্চল স্যারকে কয়েক দফায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা দীর্ঘদিন আগে দিয়েছি। এখনো বিলের কোন ব্যবস্থা হয়নি। সহকারি শিক্ষক সনম ফারহানা দিয়েছেন ২ হাজার ৫০০ টাকা। সহকারি শিক্ষিকা মোছা. হালিমা খাতুন টাকা দিয়েছেন আব্দুল কাউয়ুমকে। মারুফা ইয়াসমিন বলেন, কাউয়ুম স্যারকে দফায় দফায় সাত হাজার টাকা দিছি। নারগীস আক্তার দিয়েছেন ২ হাজার টাকা, ফাতিমা আক্তার ২ হাজার টাকা। এভাবে ১৪১ শিক্ষকের কাছে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা উত্তোলন করা হলেও নিজেদের বিল না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
উৎকোচ আদায়ের বিষয়টি ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক চঞ্চল মাহমুদ ও মালিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান স্বীকার করে বলেন, ফটোকপি ও এদিক সেদিক যাওয়া-আসাতে খরচ হয়েছে। তবে আব্দুল কাইয়ুমকে মুঠোফোনে কল দিলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে ব্যস্ততা দেখিয়ে কলটি কেটে দেন তিনি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মোমিনুল হক বলেন, যে কাজের জন্য অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে সেখানে কোন অর্থের প্রয়োজন নেই। আমি শুধু কাগজে স্বাক্ষর করেছি। কে অর্থ উত্তোলন করেছে, কেন করেছে কিছুই জানিনা।
কা/আ
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত