যানজট, অভার লোড ও শব্দ দূষণ নিত্য দিনের
কাউনিয়া ছয় রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শক

প্রকাশ: ৯ মে ২০২৫, ১৯:০৬ | আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ০২:৩১

একটি রাস্তারও জীবন আছে। সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু একটি পরিবারের কান্না। শব্দ দূষণের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় প্রকার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। কাউনিয়ার প্রাণ কেন্দ্র ছয় মাথা রাস্তার মোড় ও আর-কে মহাসড়কে অভার লোড, শব্দ দুষন ও যানজট নিত্য দিনের হলেও ট্রাফিক কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শক। ফলে ঘটছে নিত্য দুর্ঘটনা আর শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের বিড়ম্বনা। বিগত সময়ে শিক্ষার্থীসহ ১৫জন নিহত, ২শতাধিক পথচারী আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করলেও জনগুরুত্বপূর্ন এই রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক বক্স তৈরী করলেও সড়কে যানবাহন নিয়ন্ত্রনে আজও ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেয়া হয়নি।
সরেজমিনে ছয় রাস্তা মোড়ে গিয়ে দেখাগেছে, অভার লোড, শব্দ দুষন, নিত্য যানজট ও দুর্ঘটনার বাস্তব চিত্র। মোড়েই স্থাপন করা হয়েছে ট্রাফিক বক্স কিন্তু সড়কের গুরুত্বপূর্ন মোড়ে কোন ট্রাফিক কাজ করেন না। বাস্তব সত্য হলো, করোনার চেয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। অথচ সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনা। মোড়ে শব্দ দূষণের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয় প্রকার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। শব্দ দূষণের ফলে বধিরতা, স্নায়ুযন্ত্রের উপর চাপ, রক্তনালীর সংকোচন বৃদ্ধি, ঘুম কমে যাওয়, মাথা ঝিমঝিম করা, বমিভাব, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, পড়ালেখা বিঘœসহ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘিœত হয়। অনেকের অভিযোগ ট্রাফিক বক্সের ট্রাফিক পুলিশ বেশীরভাগ সময় তিস্তা সেতু এলাকায় পাহাড়া বসিয়ে ট্রাক ও মটরসাইকেল এর কাগজপত্র চেক করা নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন। ব্যস্ততম এই মোড়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপজেলা সদর, রেলওয়ে জংশন স্টেশন, হাসপাতাল, সরকারী অফিস, ব্যাংক-বীমা ও হাট বাজার গুলোতে যাতায়তে এই মোড়টি ব্যবহার করতে হয়। উপজেলার সবচেয়ে বেশী রাজস্ব আয়ের টেপামধুপুর হাট, তকিপল হাট ও খানসামা হাট যেতে এই মোড়টি ব্যবহার করতে হয়। পার্শবর্তী পীরগাছা উপজেলার অন্নদা নগর হাট ও পাওটানা হাট যেতেও এই মোড় ব্যবহার করতে হয়। ফলে সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই হাট গুলোতে বিভিন্ন পন্য পরিবহনে ব্যবহারকারী ট্রাক, বাস গাড়ি, অটো, ভ্যান, রিক্সায় যানজট লেগেই থাকে। সন্ধারপর ঢাকা গামী নাইটকোচ, পাথর ও বালু বোঝাই ট্রাকের কারনে যান জট দীর্ঘ লাইন লেগে যায়। মোড়ে একটি গাড়ি দাড়িয়ে গেলে ছয়টি রাস্তাই বন্ধ হয়ে যায়। মোড়ে কোন ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকায় যানবাহন চলাচলে নেই কোন শৃংখলা, যে যার মতো রাস্তা চলাচল করায় দুর্ঘটনা নিত্যদিনের। সড়কে অভারলোডের গাড়িগুলো চলায় রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং শব্দ দূশনে পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে। মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ ইকবাল হোসেন জানান, সকাল-বিকাল আমরা খুবই আতংকে থাকি, কারণ বিদ্যালয়ে আসা কোমল মতি শিশুদের এই মোড় পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়, তাই কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে। স্কুল শিক্ষক অভয় চন্দ্র জানান, যানযটের ফলে রাস্তা পার হতে শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের অধিকাংশ সময় নষ্ট হয়। ছাত্র-ছাত্রীরা সময় মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে যেতে পারে না। স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিক বলেন, অসুস্থ রোগী মেডিকেলে নিতে গেলেও এই মোড় পার হতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ব্যবসায়ী জসিম জানান, যানজটের ফলে ভাল ব্যবসা হয় না। এছাড়াও শব্দ দুষনে গ্রাহকরা দোকানে বসতে চায় না। যানজট নিরশনে উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটিতে বহুবার আলোচনা হলেও এখানে ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করার জন্য কর্তৃপক্ষের কোন পদক্ষেপ নেই। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারমোঃ মহিদুল হক বলেন, জেলা মিটিং এ বিষয়টি উপস্থাপন করবো যেন এখানে ট্রাফিকের ব্যবস্থা করা হয়। এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে অভারলোড গাড়ি বন্ধ সহ ওই স্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থা চালুর দাবী জানিয়েছেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত