আদমদীঘিতে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের এসিঘর মাটির বাড়ি

  আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি  

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১৮:১৩ |  আপডেট  : ১৭ মে ২০২৫, ১৯:৩৩

বগুড়ার জেলার আদমদীঘি উপজেলায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এসিঘর সমতুল্য শান্তির নীড় মাটির বাড়ি। নতুন করে এখন আর কেউ মাটির বাড়ি তৈরী করছে না। অনেকেই মাটির বাড়ি ভেঙ্গে সমাজে সম্মান বৃদ্ধির জন্য ইটের তৈরী ছাদ ঢালাই বাড়ি করছেন। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী শান্তির নীড় এই মাটির বাড়ি। 

জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এসব মানুষের জন্য প্রায় ৭০ হাজার বসতবাড়ি রয়েছে। ১৯৭১ সালের পূর্বে পাকিস্তান শাসনামলে বসত বাড়ি মাটি দিয়ে নির্মাণ করা হতো দেড় হাত থেকে দুই হাত চওড়া মাটি দিয়ে দেওয়াল দিয়ে ১তলা, ২ তলা বাড়ি বানানো হতো। এসব বাড়ি বানাতে প্রত্যেক গ্রামেই দেওয়ালী নামে কিছু অভিজ্ঞ লোক থাকতো। তারা পারিশ্রমিক নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে দিত। ওই সব দেওয়ালের উপরে লেপন করে বিভিন্ন ডিজাইন করা হয়। যা দেখেই পরিবারের সম্ভ্রান্ততা যাচাই করা হতো। মাটির বাড়ির ছাদ খড় দিয়ে বানানো হতো। কেউবা খোলা নামের ছাউনীর বস্তু কিংবা সম্পদ শালী ব্যক্তিরা টিনের ছাউনী দিত। সে সময় বিদ্যুৎতের ব্যবহার তেমন একটা ছিল না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ভাবে গ্রামাঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ায় ইটের বাড়ি নির্মাণের দিকে ঝুঁকে পড়ে। বহু সংখ্যক যুবক কর্মী হিসাবে বিদেশে যাওয়ায় এই এলাকায় ইটের বাড়ি তৈরীর প্রবণতা বেড়ে যায়। বিদেশে কর্মরত কর্মীরা ইটের বাড়ি নির্মাণে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। ফলে মাটির বাড়ি কমে ইটের বাড়ি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে এসব মাটির তৈরী বাড়ি। 

সরজমিনে দেখা যায়, তীব্র গরম ও তীব্র শীতে মাটির বাড়ি এসির কাজ করে। এক তলা ইটের বাড়ি গরমে তপ্ত হয়ে উঠে। বসবাসের অযোগ্য হয়ে যায়। কিন্তু সকল শান্তি মাটির ঘরে। 

আদমদীঘি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সংবাদকর্মী আলহাজ গোলাম মোস্তফা জানায়, তার বাড়িতে ২টি ইটের ঘর ও ১টি মাটির ঘর রয়েছে। সে সর্বদা মাটির ঘরকে শয়ন ঘর হিসাবে ব্যবহার করেন। তিনি মাটির ঘরকে গ্রামাঞ্চলের এসি ঘর হিসাবে আখ্যা দেন। মাটির ঘর শান্তির নীড়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত